- বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) হোয়াইট হাউজের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
- প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু অনুষ্ঠানে এপির সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
- এপির অভিযোগ, এভাবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন করা হয়েছে।
- ট্রাম্প প্রশাসন নির্দিষ্ট শব্দ ব্যবহারে এপিকে বাধ্য করার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
- হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট বলেছেন, “আমরা তাদের আদালতে দেখব।”
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) হোয়াইট হাউজের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসন উদ্দেশ্যমূলকভাবে সংবাদ কভারেজে বাধা সৃষ্টি করছে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটনের একটি ফেডারেল আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।
এপি জানিয়েছে, তাদের সাংবাদিকদের হোয়াইট হাউজের বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর লঙ্ঘন। এই সংশোধনী মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে, যা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই ঘটনার সূত্রপাত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশ থেকে, যেখানে তিনি ‘মেক্সিকো উপসাগর’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘আমেরিকা উপসাগর’ করার নির্দেশ দেন। এপি এই পরিবর্তন স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানালে, হোয়াইট হাউজ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে এপির সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিং, সরকারি সফর এবং প্রেসিডেন্টের বিশেষ বিমান ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’-এ ওঠার অনুমতিও বাতিল করা হয়।
এপি অভিযোগ করেছে, ট্রাম্প প্রশাসন সংবাদ প্রতিবেদনে নির্দিষ্ট শব্দ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিল এবং তা না মানলে সংবাদ সংস্থাটির প্রবেশাধিকার স্থগিত করার হুমকি দেয়। এপি এক বিবৃতিতে জানায়, “এই ধরনের সরকারি হস্তক্ষেপ সংবাদমাধ্যমের নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা লঙ্ঘনের একটি গুরুতর উদাহরণ।”
মামলায় হোয়াইট হাউজের তিন কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে—প্রধান কর্মকর্তা সুসান ওয়াইলস, উপপ্রধান কর্মকর্তা টেইলর বুদোউইচ এবং প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট। লেভিট এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, “আমরা তাদের আদালতে দেখব।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা সঠিক অবস্থানে রয়েছি এবং হোয়াইট হাউজের তথ্য প্রচারে নির্ভুলতা বজায় রাখার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
সংবাদমাধ্যম ও সরকারের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে এই মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রেসের ওপর নিয়ন্ত্রণের যে অভিযোগ উঠেছে, তা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক নীতির পরিপন্থী এবং এটি গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।