- তৃতীয় দফায় আরও ১১২ জন ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
- ফেরত আসাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, তাদের হাত-পা শিকলে বাঁধা ছিল।
- বিশেষজ্ঞরা অভিবাসীদের জন্য আরও সুসংগঠিত আইনগত সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির আওতায় ফেরত পাঠানো ভারতীয় অভিবাসীদের বহনকারী একটি বিমান ১৬ ফেব্রুয়ারি পাঞ্জাবের শ্রী গুরু রাম দাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। বিমানটিতে ১১২ জন যাত্রী ছিলেন, যারা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। ফেরত আসাদের মধ্যে বেশিরভাগই পাঞ্জাব, হরিয়ানা, ও গুজরাট রাজ্যের বাসিন্দা।
এই বিমানটি অবতরণের মাত্র এক দিন আগে, আরেকটি বিমান আমৃতসর বিমানবন্দরে ১১৭ জন ভারতীয় অভিবাসী নিয়ে পৌঁছায়। ওই যাত্রীদের মধ্যে ৬৫ জন ছিলেন পাঞ্জাবের, ৩৩ জন হরিয়ানার, এবং বাকি ১৯ জন অন্যান্য রাজ্যের বাসিন্দা।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে চলা অভিযান তীব্র হয়েছে। ফেরত আসা কয়েকজন অভিবাসী অভিযোগ করেছেন যে, যাত্রাপথে তাদের হাতকড়া পরানো হয়েছিল এবং পা শিকলে বাঁধা ছিল, যা আন্তর্জাতিক প্রত্যাবাসন নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অভিমত জানিয়েছেন তারা।
ফেরত আসা ব্যক্তিদের মধ্যে পাঞ্জাবের পাটিয়ালা জেলার দুজন যুবকও রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে দায়ের হওয়া একটি হত্যাকাণ্ডের মামলা রয়েছে। আমৃতসর বিমানবন্দরে অবতরণের পরপরই স্থানীয় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে।
এছাড়াও, ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় ফেরত পাঠানো অভিবাসীরা অভিযোগ করেছিলেন, তাদের পুরো যাত্রাপথে হাত ও পা বাঁধা ছিল এবং ভারতীয় ভূখণ্ডে পৌঁছানোর পরই তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মার্কিন প্রশাসনের সামনে এই বিষয়টি উত্থাপন করার দাবি জানানো হয়।
অভ্যন্তরীণ চাপ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখে ভারত সরকার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন অভিবাসন নীতি আরও কঠিন হতে পারে, এবং এর প্রভাব আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর পড়বে।
এ ঘটনার পর, বিশেষজ্ঞরা সুনির্দিষ্ট অভিবাসন নীতির আওতায় মানবাধিকার লঙ্ঘন এড়াতে সরকারকে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। ভারত সরকারের উচিত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য সুসংগঠিত আইনগত সহায়তা প্রদান করা, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে।