কঙ্গোর কাসাই প্রদেশে ইবোলা প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। রোববার সংস্থাটি জানায়, প্রথম দফায় ৪০০ ডোজ ‘এরভেবো’ ইবোলা টিকা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি ও সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রদান করা হচ্ছে।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, দেশটির মজুদে থাকা দুই হাজার ডোজ টিকার মধ্যে ৪০০ ডোজ ইতোমধ্যে কাসাই প্রদেশের বুলাপে এলাকায় পৌঁছেছে, যা বর্তমান প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল। এছাড়া আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন সরবরাহ সমন্বয়কারী গ্রুপ (আইসিজি) কঙ্গোতে আরও ৪৫ হাজার ডোজ টিকা পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছে।
প্রায় তিন বছর পর কঙ্গোতে এ ধরনের প্রাদুর্ভাব ঘোষণা করা হলো। সেপ্টেম্বরের শুরুতে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাদুর্ভাবের ঘোষণা দেয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৩২টি সন্দেহভাজন ও ২০টি নিশ্চিত আক্রান্তের ঘটনা শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যুবরণ করেছে ১৬ জন।
ডব্লিউএইচও–এর প্রোগ্রাম এরিয়া ম্যানেজার প্যাট্রিক ওটিম জানান, সময়মতো পদক্ষেপ নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলেও তা হবে চ্যালেঞ্জিং। তিনি বলেন, “একটি নতুন সংক্রমণ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে শনাক্ত হয়েছে, যা ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ সীমান্ত পেরিয়ে বিশেষ করে প্রতিবেশী অ্যাঙ্গোলায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।”
সহায়তাকর্মীরা সতর্ক করে বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশি সহায়তা কমে যাওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএআইডি কার্যক্রম সীমিত হওয়ায় কঙ্গোর জন্য কার্যকর প্রতিক্রিয়া গড়ে তোলা কঠিন হতে পারে। এজন্য দেশটির সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও অংশীদারদের যৌথভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন তারা।
কঙ্গোর ঘন অরণ্য ইবোলা ভাইরাসের প্রাকৃতিক আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে জ্বর, শরীর ব্যথা ও ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে ভাইরাসটি আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দীর্ঘদিন লুকিয়ে থেকে পুনরায় সক্রিয় হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, প্রাদুর্ভাব দমন করা এখনো সম্ভব, তবে দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।


