- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘সংবিধানের কবর’ মন্তব্যের সমালোচনা করেন মির্জা আব্বাস।
- ১৯৭২ সালের সংবিধানকে শহীদের রক্ত দিয়ে লেখা উল্লেখ করে এর মর্যাদা রক্ষার আহ্বান।
- বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়কালে ফ্যাসিবাদী প্রভাব অব্যাহত থাকার অভিযোগ।
- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে জাতির প্রত্যাশা পূরণে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান।
ঢাকা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪ : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, “শহীদের রক্তের ওপর লেখা সংবিধানকে কবর দেওয়ার কথা বলা অত্যন্ত কষ্টের।” আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্যের জবাবে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান।
তিনি বলেন, “সংবিধান যদি ত্রুটিপূর্ণ হয়, তবে সংশোধন করা উচিত। কিন্তু কবর দেওয়ার ভাষা ফ্যাসিবাদের মুখ থেকে আসে। এ ধরনের কথা জাতি আশা করে না। ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের এ বিষয়ে সংযমী হওয়া উচিত।”
বর্তমান প্রেক্ষাপট
আজ বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “১৯৭২ সালের সংবিধান মুজিববাদী সংবিধান। এর কবর রচনা করতে হবে।” একই সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে “নাৎসি বাহিনীর মতো অপ্রাসঙ্গিক” ঘোষণা করার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
মির্জা আব্বাস তাঁর বক্তব্যে বলেন, “১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। আমার বহু বন্ধু শহীদ হয়েছে। সেই শহীদদের রক্তের ওপর ভিত্তি করে লেখা সংবিধানের প্রতি আমাদের দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্টের আন্দোলন ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এটি ছাত্র-জনতার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সফল হয়েছে। কিন্তু এককভাবে এর মালিকানা দাবি করা বিভাজন সৃষ্টি করবে।”
ফ্যাসিবাদী প্রভাবের অভিযোগ
“‘বাকশালীদের প্রেতাত্মাদের বোগলতলায় রেখে আপনারা কী সংস্কার করবেন?” প্রশ্ন রেখে মির্জা আব্বাস বলেন, এখনো ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়ের আটজন ব্যক্তি সচিব হিসেবে মন্ত্রণালয়ে অবস্থান করছেন। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, এত বিরোধিতার পরও দুই–তিন আগে আরেকজন সাবেক বাকশালী সচিবকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাকশালীদের প্রেতাত্মাদের বোগলতলায় রেখে আপনারা কী সংস্কার করবেন? আমরা কি আওয়ামী লীগকে আবার ফিরিয়ে আনার রাস্তা করে দিচ্ছি?’
সভায় উপস্থিত ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতারা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর জোর দেন। বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেন, “ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের কোনো হয়রানি করা হবে না।”
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, “সঠিক সংবাদ প্রচারে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির ঢাকা মহানগরীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাসার, বর্তমান আহ্বায়ক রফিকুল আলম (মজনু), খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত ফটোগ্রাফার নুরুদ্দিন আহমেদ, এবং সাংবাদিকরা, যেমন বাসির জামাল, নাজিয়া আফরিন, রেজা করিম, আহমেদ সালেহীন, মহাসিন হোসেন, কামরুজ্জামান রাজীব, সাইফুদ্দিন রবিন, বাবুল তালুকদার প্রমুখ। সভার সঞ্চালনা করেন তানভীর আহমেদ।