সাত দিনের ব্যবধানে দেশে আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ১৯ মিনিটে সিলেটে ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের তথ্যে জানা গেছে, উৎপত্তিস্থল রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সজিব হোসেন জানান, ভূমিকম্পটি ছিল স্বল্পমাত্রার এবং এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের মতে, রিখটার স্কেলে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প সাধারণত বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করে না। তবে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবন বা দুর্বল কাঠামোয় সামান্য ক্ষতি হতে পারে।
এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যার উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসাম রাজ্য। রিখটার স্কেলে সেটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৯। চলতি বছরের ৫ মার্চ সিলেটে আরেকটি ভূমিকম্প হয়, যার উৎপত্তিস্থল ছিল ভারত–মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা। এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। এছাড়া ১ এপ্রিলও সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, আজকের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ডাউকি ফল্ট অঞ্চল। বাংলাদেশের ভূমিকম্পের দুটি প্রধান উৎস হলো উত্তরে ডাউকি ফল্ট এবং আরেকটি পূর্ব দিকে। তিনি জানান, ডাউকি ফল্ট বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। সাম্প্রতিক কম্পনগুলো স্বল্পমাত্রার হলেও এগুলোকে সতর্কসংকেত হিসেবে দেখা উচিত।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই এলাকাতেই ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কয়েকটি ৪ মাত্রা বা তার বেশি শক্তির ভূমিকম্প হয়েছিল। ইতিহাসে দেখা যায়, ডাউকি ফল্টে ১৭৮৭ সালের ভূমিকম্পে ব্রহ্মপুত্র নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যায়। এর ১১০ বছর পর ১৮৯৭ সালে একই এলাকায় ঘটে ‘গ্রেট ইন্ডিয়া আর্থকোয়েক’, যার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৮ দশমিক ২। সে সময় আসাম ও মেঘালয়ের পাশাপাশি ঢাকায়ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঐতিহাসিক তথ্যমতে, ভূমিকম্পে ঢাকায় পাঁচজন নিহত হন এবং ইংরেজ কর্মকর্তারা দীর্ঘ সময় তাঁবু ও বজরায় বসবাস করেছিলেন।


