- শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য কাগজপত্র ভারতে পাঠানো হয়েছে।
- জাতিসংঘের রিপোর্টে শেখ হাসিনার নির্দেশে ১৪০০ হত্যা, ১১৮ শিশু শিকার।
- ৬৬% হত্যাকাণ্ড মিলিটারি রাইফেলের গুলিতে, ১২% শটগানে।
- আসাদুজ্জামান খান কামাল হাসিনার নির্দেশে হত্যাকাণ্ডের সমন্বয় করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জুলাই হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রধান আসামী ক্ষমতাচ্যূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করার ভারতকে আবারও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং অন্যান্য কাগজপত্র ভারতে পাঠানো হয়েছে কিনা—এমন প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, “প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র ভারতে পাঠানো হয়েছে, এবং যখন বাংলাদেশ মৌখিকভাবে ভারতকে জানিয়েছিল, তখন প্রয়োজনীয় তথ্যও পাঠানো হয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, “নেতৃত্ব যখন মনে করবেন যে এটি করার সঠিক সময়, তখন তা করা হবে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নোট ভারবাল পাঠিয়েছে, তবে এখনও ভারত শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ বিষয়ে সাড়া দেয়নি। রফিকুল আলম বলেন, “আমরা ভারতের কাছ থেকে সাড়া প্রত্যাশা করছি।”
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল নিশ্চিত করেছেন যে, ভারত বাংলাদেশের কাছ থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ পেয়েছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ড, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। গণ অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট তিনি ভারতে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন।
বাংলাদেশ ও ভারত ২০১৩ সালে প্রত্যর্পণ চুক্তি সই করেছিল, যা ২০১৬ সালে সংশোধন করে পলাতক অপরাধীদের দ্রুত হস্তান্তরের সুবিধা তৈরি করা হয়।
সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১৪০০ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা হয়, যার মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থী, নিরস্ত্র বিক্ষোভকারী, নারী ও শিশু অন্তর্ভুক্ত। হত্যাকাণ্ডের শিকার ১১৮টি শিশু ছিল, যা মোট হত্যাকাণ্ডের ১২-১৩ শতাংশ। এ ছাড়া, প্রায় ১২ হাজার মানুষ আহত হয়েছে।
রিপোর্টে জানা গেছে, ৬৬ শতাংশ মানুষ মিলিটারি রাইফেলের গুলিতে এবং ১২ শতাংশ শটগানের গুলিতে নিহত হয়েছে। প্রমাণিত হয়েছে যে, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হাসিনা নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেন এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুরো বিষয়টি সমন্বয় করেন।
গত সেপ্টেম্বরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, “অপরাধ করলে শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনা উচিত, তাকে বিচারের মুখোমুখি করা দরকার।”