- অ্যাপল (Apple)-এর শেয়ারের মূল্য দ্রুত বৃদ্ধির ফলে এর বাজার মূল্য ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করতে চলেছে।
- কোম্পানির AI উন্নয়ন এবং iPhone বিক্রির ইতিবাচক প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে।
- ওপেন এআই (0penAI)-এর চ্যাটজিপিটি এবং জেনারেটিভ এআই-এর অন্তর্ভুক্তি অ্যাপলের পণ্য উন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
- অ্যাপল নিজের চিপ তৈরি করে কোয়ালকম (Qualcomm)-এর উপর নির্ভরতা কমাতে উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রযুক্তি জগতের অগ্রদূত অ্যাপল আবারও বিনিয়োগকারীদের নজর কেড়েছে। সম্প্রতি শেয়ারের দাম বৃদ্ধি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে কোম্পানিটি ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজার মূল্য অর্জনের পথে। বর্তমানে এর বাজারমূল্য ৩.৮৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা জার্মান ও সুইস স্টক এক্সচেঞ্জের সম্মিলিত মূল্যকে অতিক্রম করেছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অ্যাপল তার পণ্যসম্ভারে এআই প্রযুক্তি সংযুক্ত করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন আশা জাগিয়েছে। চ্যাটজিপিটি’র অন্তর্ভুক্তি এবং জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষমতা আইফোনের বাজার সম্প্রসারণ ও পুনরুদ্ধারে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। অ্যাপলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফিচারগুলি আইফোন ১৬ সিরিজের উন্নত মডেলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
AI ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন পণ্য বাজারে আনার মাধ্যমে অ্যাপল আগামী বছরের মধ্যে গ্রাহকদের চাহিদা পুনরুদ্ধারে সফল হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে আইফোনের ক্যামেরা, ব্যাটারি এবং পারফরম্যান্সে উল্লেখযোগ্য উন্নতি আসতে পারে।
গত নভেম্বর থেকে অ্যাপলের শেয়ার ১৬% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা এর বাজার মূল্যে ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যোগ করেছে। কিন্তু আইফোন বিক্রিতে সাম্প্রতিক শ্লথগতির কারণে কিছু বিনিয়োগকারী সংশয়ে রয়েছেন। প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব বৃদ্ধির পূর্বাভাস নিম্ন থেকে মধ্যম পর্যায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে, LSEG-এর ডেটা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে আইফোন বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই পুনরুদ্ধারের পেছনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং নতুন পণ্যের উদ্ভাবন বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ছাড়াও, অ্যাপল নিজস্ব চিপ তৈরির মতো বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে। কোয়ালকম (Qualcomm)-এর উপর নির্ভরতা কমাতে কোম্পানিটি ২০১৯ সালে ইনটেল (Intel)-এর মোডেম বিভাগ ১বিলিয়ন ডলারে কিনে নেয়। আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে অ্যাপল তার নিজস্ব সেলুলার মোডেম বাজারে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে অ্যাপল তাদের পণ্যে আরও উদ্ভাবনী ফিচার অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে এবং বাইরের সরবরাহকারীদের উপর নির্ভরতা কমাবে। এ উদ্যোগটি অ্যাপলকে তাদের প্রতিযোগীদের তুলনায় আরও এগিয়ে রাখতে পারে।
অ্যাপল-এর সাম্প্রতিক সাফল্য এবং পরিকল্পনা প্রযুক্তি শিল্পে নতুন বিপ্লবের সূচনা করছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি এবং নিজস্ব চিপ নির্মাণের উদ্যোগে কোম্পানিটি শুধু বাজার মূল্য বৃদ্ধি নয়, বরং প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে চলেছে। ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে অ্যাপল আবারও প্রমাণ করছে যে উদ্ভাবনের শক্তি প্রযুক্তি জগতে কীভাবে নতুন ইতিহাস তৈরি করতে পারে।