বাংলাদেশে আর কোনো নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। তিনি দাবি করেন, ছাত্র ও সাধারণ মানুষের গণ–আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের “চ্যাপ্টার ক্লোজড” হয়ে গেছে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সংগঠনের সমন্বয় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, পৃথিবীর কোথাও বিপ্লবী ও পরাজিত ফ্যাসিস্টরা একসঙ্গে রাজনীতি চালিয়ে যেতে পারেনি। বাংলাদেশেও খুনি ও ফ্যাসিস্টদের রাজনীতির সুযোগ দেওয়া হবে না। তাঁর দাবি, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ, দল হিসেবে এ দলের বিচার হওয়া উচিত এবং তা শিগগিরই হবে।
গত ১৬ বছরে দেশে হাজারো মানুষকে গুম ও খুন করা হয়েছে উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, সাম্প্রতিক গণ–অভ্যুত্থানে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দায়ীদের বিচার না হলে দেশের মানুষ ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা ক্ষমা করবে না।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে এর আগে দৃশ্যমান বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে। তাঁর ভাষায়, শেখ হাসিনাসহ ২৫ থেকে ৩০ জনের বিচার শুরু করা ছাড়া বিকল্প নেই। এ জন্য গণপরিষদ নির্বাচন ও জুলাই সনদের মাধ্যমে আইনি ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে।
ভারত প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, বাংলাদেশে আর ভারতীয় আধিপত্যবাদের ছায়ায় কোনো নির্বাচন হবে না। কোনো এজেন্সির সহযোগিতা বা বহিরাগত প্রভাব খাটিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয়।
যুক্তরাষ্ট্র সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হামলার বিষয়েও তিনি মন্তব্য করেন। সারজিসের মতে, তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় সরকারের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এ ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রীতম দাস ও এহতেশাম হক, সুনামগঞ্জ জেলার প্রধান সমন্বয়কারী দেওয়ান সাজাউর রাজা চৌধুরী এবং যুগ্ম সমন্বয়কারী আবু ছালেহ নাসিম উপস্থিত ছিলেন। সারজিস আলম জানান, এনসিপিকে শক্তিশালী করতে জেলা পর্যায়ে ধারাবাহিক সমন্বয় সভা চলছে।
গণ অধিকার পরিষদের সঙ্গে এক হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জনগণ এই ঐক্য চায়। কারণ, গণ অধিকার পরিষদ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা একটি দল। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা চলছে।


