- লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য লন্ডনে গেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
- হিথ্রো বিমানবন্দরে স্বাগত জানান ছেলে তারেক রহমান ও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান।
- প্রথমে লন্ডনের ‘দ্য ক্লিনিক’-এ চিকিৎসা, পরে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস হাসপাতালে।
- ২০১৮ সালের কারাবাসের পর থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি।
- সাত বছর পর মা-ছেলের দেখা, আবেগঘন পরিবেশ।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পৌঁছেছেন। আজ বুধবার, ৮ জানুয়ারি, স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে তাঁর বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অবতরণ করে।
বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান ছেলে তারেক রহমান এবং পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান। ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডন সফরের পর থেকে খালেদা জিয়া আর কোনো বিদেশ সফরে যাননি। এই দীর্ঘ সময়ে তাঁর সঙ্গে ছেলে তারেক রহমানের সরাসরি কোনো দেখা হয়নি।
সাত বছর পর হিথ্রো বিমানবন্দরে মা-ছেলের পুনর্মিলন হয়। এ সময় বিমানবন্দরে একটি আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যুক্তরাজ্য বিএনপির শীর্ষ নেতারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিমান বন্দরে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হজরত আলী খান। তিনি খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। বিএনপির যুক্তরাজ্য শাখার নেতারাও এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
তারেক রহমান নিজে গাড়ি চালিয়ে মাকে নিয়ে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলের ‘দ্য ক্লিনিক’ হাসপাতালে যান। স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে তাঁরা রওনা দেন এবং বেলা ১১টায় হাসপাতালে পৌঁছান।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস এবং আর্থ্রাইটিসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন এখন খুবই জরুরি।
প্রথমে লন্ডনের এই ক্লিনিকে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার পরিকল্পনা রয়েছে। এই হাসপাতালে ২০২৩ সালে খালেদা জিয়ার শরীরে রক্তনালির সফল অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, পুরো চিকিৎসা প্রক্রিয়া শেষ করতে দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে।
২০১৮ সালে প্রশ্নবিদ্ধ দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে যায়। তখন বিদেশে চিকিৎসার জন্য বিএনপি ও তাঁর পরিবার সরকারের কাছে আবেদন করলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গোপনে ভারতে আশ্রয় গ্রহন করেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। আদালত তাঁর বিরুদ্ধে থাকা দুটি দুর্নীতির মামলার রায় বাতিল করেন।
দীর্ঘদিনের আইনি ও রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে অবশেষে খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেলেন। তাঁর সুস্থতা ও দ্রুত আরোগ্য কামনায় দেশবাসী প্রার্থনা করছে। চিকিৎসা শেষে তাঁর দেশে ফিরে আসার প্রত্যাশায় রয়েছেন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।