- তিব্বতের শিগাটসের কাছে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে ৭ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে।
- কমপক্ষে ১২৬ জন নিহত এবং ১৮৮ জন আহত হয়েছে।
- ৩,৬০০ টিরও বেশি ঘরবাড়ি ধসে গেছে, হাজার হাজার মানুষ শীতের তীব্র ঠান্ডায় গৃহহীন।
- উদ্ধার কার্যক্রমে ৩,৪০০ জন কর্মী এবং উল্লেখযোগ্য সরকারি সম্পদ মোতায়েন করা হয়েছে।
- নেপাল, ভারত, ভুটান এবং বাংলাদেশে কম্পন অনুভূত হলেও ক্ষয়ক্ষতি সীমিত।
৭ জানুয়ারি, ২০২৫ : চীনের তিব্বত অঞ্চলে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের কম্পন নেপাল, ভারত, ভুটান এবং বাংলাদেশেও অনুভূত হয়েছে। কম্পনের কেন্দ্র ছিল তিংরি কাউন্টি, যা মাউন্ট এভারেস্ট থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে এবং শিগাটস শহরের কাছাকাছি। স্থানীয় সময় সকাল ৯:০৫ মিনিটে ভূমিকম্পটি হয়। এতে অনেক ভবন ধসে পড়ে এবং হাজার হাজার মানুষ শীতের ঠান্ডায় গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
সরকারি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পে ১২৬ জন মারা গেছে এবং ১৮৮ জন আহত হয়েছে। বিশেষভাবে তিংরি, লহাতসে এবং সাগ্যা এলাকায় ক্ষতি বেশি হয়েছে। ৩,৬০০-এরও বেশি ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। রাতে তাপমাত্রা -১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাওয়ায় গৃহহীন মানুষদের দুর্ভোগ বেড়েছে।
দুর্যোগের পর চীন ৩,৪০০ উদ্ধারকর্মী পাঠিয়েছে, এর মধ্যে ৩৪০ জন চিকিৎসকও রয়েছেন। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং “প্রাণ বাঁচানোর জন্য সব কিছু করা হবে” বলে নির্দেশ দিয়েছেন। ত্রাণ সহায়তার জন্য ১০ কোটি ইউয়ান (১৩.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বরাদ্দ করা হয়েছে।
ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে তাঁবু, কম্বল এবং গরম কাপড় সরবরাহ করা হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ সরাতে এবং আহতদের চিকিৎসা দিতে দিন-রাত কাজ করছে। স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্ষতির পরিমাণ ও উদ্ধার কাজের সমন্বয় করা হচ্ছে।
নেপালের কাঠমাণ্ডু শহরে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে। সেখানে ১৩ জন আহত হয়েছে এবং কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভুটান এবং ভারতের বিহার রাজ্যেও কম্পন অনুভূত হয়েছে, তবে সেখানে বড় ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
।ভূমিকম্পের কেন্দ্রের কাছে মাউন্ট চোমোলাংমা (এভারেস্ট) পর্যটন এলাকা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদিকে, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিবেশী দেশগুলো চীনকে সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়েছে।
এই বিপর্যয় হিমালয় অঞ্চলের ভূমিকম্প ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়িয়েছে এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি ও স্থায়ী অবকাঠামো তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা আরো স্পষ্ট করেছে। উদ্ধার কাজ শেষ হলে, দীর্ঘমেয়াদী পুনর্গঠন ও নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর দেয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।