বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ব্যক্তিগত স্বার্থে যেন কেউ দলকে ব্যবহার করতে না পারে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান আলোচনায় অংশ নিয়ে তারেক রহমান বলেন, আজকের এই সম্মেলন থেকে দুটি অঙ্গীকার করতে হবে। প্রথমত, দলের সিদ্ধান্তের পেছনে যেকোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ থাকা, দ্বিতীয়ত, কোনো ব্যক্তি যেন দলকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে।
তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যদি দলের ঐক্য অটুট রাখা যায়, তবে জনগণের রায় ধানের শীষের পক্ষেই যাবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির শক্তি জনগণের সঙ্গে সম্পর্কের মধ্যে নিহিত। জনগণের পাশে থাকা এবং জনগণকে দলের পাশে রাখা জরুরি। বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করছে এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়েছে।
তারেক রহমান জানান, শেখ হাসিনার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে, যার বেশিরভাগই আড়াই বছর আগে বিএনপি জনগণের সামনে উপস্থাপন করেছিল। তিনি দাবি করেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এসব বিষয়ে মতামত দিয়েছে। কিছু মতভেদ থাকলেও মানুষের রাজনৈতিক অধিকার, নিরাপত্তা ও বেঁচে থাকার প্রশ্নে কোনো বিভেদ নেই।
তারেক রহমান বলেন, জনগণের ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে একটি জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি, যা জাতীয় উন্নয়ন ও কল্যাণ নিশ্চিত করবে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, স্বৈরাচার পতনের পর অদৃশ্য শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কার কথা তিনি আগে থেকেই সতর্ক করেছিলেন। এখন সেই শক্তি দৃশ্যমান হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ পরিস্থিতিতে নেতা-কর্মীদের বিভ্রান্ত না হয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, বড় দলে ভিন্নমত থাকতে পারে। তবে একবার নেতৃত্ব ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হলে সেটি মানা প্রত্যেক সদস্যের দায়িত্ব। তিনি প্রশ্ন রাখেন, “আপনারা কি কারও ব্যক্তিগত কর্মী, নাকি ধানের শীষের কর্মী?” তারেক রহমান জোর দিয়ে বলেন, যেমন পরিবারে প্রবীণদের সিদ্ধান্ত সবাই মেনে চলে, তেমনি দলের নেতা-কর্মীদেরও নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
