সোমবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২৫

রাজধানীর বিজয়নগরে গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বিজয়নগরে গণঅধিকার–জাপা সংঘর্ষে পুলিশের লাঠিচার্জে অনেকেই আহত হয়েছেন।”

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের নেতৃত্বে বিজয়নগর থেকে কাকরাইলের দিকে মিছিল বের হয়। এই সময়ে জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা-কর্মী তাদের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। মিছিলকে ঘিরে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। তারা দুই পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।

রাত সাড়ে আটটার দিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বিজয়নগর কার্যালয়ে উপস্থিত হন। এই সময়ে গণঅধিকার পরিষদের নেতারা গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যূত শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারের দোসর জাতীয় পার্টির  কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা লাঠিচার্জ করে নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেন। এ সময় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুর গুরুতর আহত হন।

সংঘর্ষের কারণে আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, নিরাপত্তা বাহিনী আংশিকভাবে মোতায়েন থাকলেও ঘটনাস্থলে আতঙ্ক দেখা দেয়। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী এলাকায় অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।

পক্ষপক্ষের দাবিও ভিন্ন। জাতীয় পার্টি দাবি করেছে, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা প্রথমে তাদের কার্যালয়ের ওপর হামলা চালিয়েছেন। জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, “হামলার একপর্যায়ে আমাদের নেতাকর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।” এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী জানান, “আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলার চেষ্টা হয়েছিল। তবে সেনা ও পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।”

অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদ অভিযোগ করেছে, মিছিলের সময় জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও উসকানি দিয়ে সংঘর্ষ সৃষ্টি করেছে। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, “জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের মিছিলে হঠাৎ হামলা চালিয়েছে। আহত নেতাকর্মীদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।” গণঅধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান আরও জানান, “আমাদের পূর্বনির্ধারিত শান্তিপূর্ণ মিছিলকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে, এতে কমপক্ষে ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।”

প্রত্যক্ষদর্শী খোকন চন্দ্র বর্মণ জানান, “আমরা মিছিলে শান্তিপূর্ণভাবে যাচ্ছিলাম, কিন্তু জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা প্রথমে হামলা চালায়। পুলিশ ও সেনা পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আমার পায়ে ও হাতে গুরুতর আঘাত লেগেছে, হাসপাতালে চিকিৎসা করা হচ্ছে।”

সংঘর্ষের ঘটনা রাজধানীতে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের সংঘর্ষ শুধু রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, বরং নিরাপত্তা ও জনশান্তির জন্যও বড় হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।

Share.
Exit mobile version