সোমবার, অক্টোবর ২৭, ২০২৫

এ বছর যুক্তরাজ্যে প্রজাপতির সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও দীর্ঘমেয়াদে প্রজাতিগুলো টিকে থাকার লড়াইয়ে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে পরিবেশবিষয়ক দাতব্য সংস্থা বাটারফ্লাই কনজারভেশন। সংস্থাটি জানিয়েছে, জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া না হলে প্রজাপতির পতন ঠেকানো কঠিন হবে।

বাটারফ্লাই কনজারভেশনের আয়োজিত ‘বিগ বাটারফ্লাই কাউন্ট’ জরিপে চলতি বছরের ১৮ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ইংল্যান্ডের লিঙ্কনশায়ার অঞ্চলে ৩২ হাজারেরও বেশি প্রজাপতি ও দিবাচর পতঙ্গ গণনা করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রজাপতির সংখ্যা ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। তবে গবেষকদের মতে, প্রত্যাশিত মাত্রায় বৃদ্ধি ঘটেনি।

সংস্থার বিজ্ঞান বিভাগ প্রধান ড. রিচার্ড ফক্স জানান, গত ১৫ বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে বিস্তৃত প্রজাতিগুলোর মধ্যে দ্বিগুণেরও বেশি সংখ্যক প্রজাতির পতন ঘটেছে, তুলনায় খুব কমসংখ্যক প্রজাতি বেড়েছে। তিনি বলেন, “যদিও এ বছর গড়পড়তা ভালো মৌসুম কেটেছে, এক-তৃতীয়াংশ প্রজাতি প্রতিকূল আবহাওয়ার মাঝেও খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে।”

ড. ফক্স মনে করিয়ে দেন, গত বছরের ফলাফল ছিল সর্বনিম্ন, যা ছিল একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা। তার মতে, প্রজাপতির সংখ্যা হ্রাসের পেছনে মূল কারণ হলো প্রাকৃতিক বাসস্থান হারানো, জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃষিকাজে কীটনাশকের ব্যবহার। তিনি বলেন, “এই বছর সূর্যের আলো বেশি থাকলেও, সামগ্রিকভাবে প্রজাপতির সংখ্যা আধুনিক মানদণ্ডে খুব বেশি নয়। বাসস্থান পুনরুদ্ধার, পরিবেশ রক্ষা ও কীটনাশকের ব্যবহার কমানো ছাড়া উল্লেখযোগ্য উন্নতি আশা করা কঠিন।”

এ বছর লিঙ্কনশায়ারে ১ হাজার ৯০০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রজাপতি গণনায় অংশ নেন। সেখানে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে ‘লার্জ হোয়াইট’ প্রজাতি। পুরো যুক্তরাজ্যজুড়ে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষ জরিপে অংশ নিয়ে ১৭ লাখ প্রজাপতি ও পতঙ্গ গণনা করেছেন। শীর্ষ পাঁচ প্রজাতি ছিল লার্জ হোয়াইট, স্মল হোয়াইট, গেটকিপার, রেড অ্যাডমিরাল এবং মেডো ব্রাউন।

গবেষণায় দেখা গেছে, লার্জ হোয়াইট ও স্মল হোয়াইট এবার পর্যন্ত তাদের সেরা ফলাফল করেছে। স্মল টরটয়েসশেল প্রজাতির অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে এবং জার্সি টাইগার মথ রেকর্ডসংখ্যায় পাওয়া গেছে। তবে হোলি ব্লু দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ফলাফল করেছে, কমন ব্লু তৃতীয় সর্বনিম্ন এবং মেডো ব্রাউন চতুর্থ সর্বনিম্ন সংখ্যায় নথিভুক্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রজাপতি কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, বরং পরিবেশগত ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্যের গুরুত্বপূর্ণ সূচক। তাই যুক্তরাজ্যে প্রজাপতির সংখ্যা রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।

Share.
Exit mobile version