রবিবার, ডিসেম্বর ৭, ২০২৫

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার কবর নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তাঁকে মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচু বেদি তৈরি করে দাফন করার পর ‘শরিয়তবিরোধী’ দাবি তুলে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির সভাপতি মাওলানা জালাল উদ্দিন প্রামাণিক। তিনি অভিযোগ করেন, নুরুল হক জীবিত অবস্থায় নিজেকে ইমাম মাহদি দাবি করেছিলেন এবং তাঁর আস্তানায় ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড চালাতেন। মৃত্যুর পরও তাঁকে বিশেষ কায়দায় দাফন করায় স্থানীয় আলেম সমাজ ও ধর্মপ্রাণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

নুরুল হক গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নিজের বাড়িতে দরবার শরিফ গড়ে তোলেন। আশির দশকের শেষ দিকে ইমাম মাহদি দাবি করায় তিনি জনরোষের মুখে পড়েন এবং ১৯৯৩ সালে মুচলেকা দিয়ে সাময়িকভাবে এলাকা ছাড়েন। তবে কিছুদিন পর আবার ফিরে এসে দরবারের কার্যক্রম চালু করেন। গত ২৩ আগস্ট ভোরে বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই রাতে জানাজা শেষে তাঁকে দরবার প্রাঙ্গণে মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচুতে দাফন করা হয়। কবর পবিত্র কাবার আদলে রঙ করায় বিতর্ক আরও বাড়ে।

উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি জানিয়েছে, প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক দফা আলোচনার পরও কবর সমান করার বিষয়ে পরিবার কোনো অগ্রগতি দেখায়নি। তারা দাবি করেছে, বৃহস্পতিবারের মধ্যে কবর সমান না করলে শুক্রবার জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ ও ‘মার্চ ফর গোয়ালন্দ’ কর্মসূচি পালন করা হবে।

জেলা ইমাম কমিটির সভাপতি মো. ইলিয়াস মোল্লা বলেছেন, প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, নইলে এর দায়ভার নিতে হবে সরকারকেই। একই সুরে উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব আইয়ুব আলী খান ঘোষণা দেন, কবর নিচু না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

অভিযোগের জবাবে নুরুল হকের ছেলে মেহেদী নূর জিলানী বলেন, তাঁর বাবা কখনো নিজেকে ইমাম মাহদি দাবি করেননি। তিনি কেবল ইমাম মাহদির দ্বীন প্রচার করতেন। পরিবারের দাবি, ইসলামী বিধান মেনেই কবর কিছুটা উঁচু করা হয়েছে, তবে সেটি সর্বোচ্চ তিন থেকে চার ফুট হতে পারে। ভক্ত ও খাদেমদের সঙ্গে আলোচনা চলছে, খুব শিগগির কবর নিয়ে করণীয় নির্ধারণ হবে।

Share.
Exit mobile version