- নির্বাচন নিরপেক্ষ ও আনন্দঘন হবে বলে আশ্বাস
- কম সংস্কার হলে ডিসেম্বরে, বড় সংস্কারে বিলম্ব
- সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় সরকারের কঠোর পদক্ষেপ
- ভুল তথ্য ছড়িয়ে উদ্বেগ, তদন্তের আহ্বান
- যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও জোরদার করার আলোচনা
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর গ্যারি পিটার্সের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনের দিন জনগণ উৎসবের আমেজে ভোট দেবে, যেমনটি অতীতেও দেখা গেছে।”
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার উপায় নিয়ে মতবিনিময় করেন। সিনেটর পিটার্স অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কার উদ্যোগ, গুরুত্বপূর্ণ কমিশনের প্রতিবেদন এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চান।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস জানান, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সংক্ষিপ্ত সংস্কার পরিকল্পনায় একমত হলে নির্বাচন ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। তবে যদি তারা বড় পরিসরের সংস্কার চায়, নির্বাচন কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যখন প্রধান কমিশনগুলোর প্রস্তাবিত সংস্কারে সম্মত হবে, তখন তারা ‘জুলাই চার্টার’-এ স্বাক্ষর করবে, যা দেশের ভবিষ্যৎ পথ নির্ধারণ করবে।
সিনেটর পিটার্স সরকারের সংস্কার পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি আরও বলেন, তার নির্বাচনী এলাকা মিশিগানের ডেট্রয়েটসহ বিভিন্ন শহরে অনেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ বাস করেন। সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় তাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, এ বিষয়ে ব্যাপক ভুল তথ্যও ছড়িয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রেও পৌঁছেছে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, তার সরকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তা তাদের ধর্ম, জাতি, লিঙ্গ বা পরিচয় যাই হোক না কেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন, গত বছরের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর কিছু হামলার ঘটনা ঘটলেও তা ধর্মীয় নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। সরকার এসব ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি সিনেটর পিটার্সকে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর ও গ্রাম পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান এবং তাকে অনুরোধ করেন যাতে তিনি ও অন্যান্য মার্কিন রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা বাংলাদেশ সফর করে বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। ইউনূস বলেন, “আমাদের সহায়তা দরকার। অনুগ্রহ করে আপনার বন্ধুদের বাংলাদেশ ভ্রমণের পরামর্শ দিন। এভাবেই আমরা ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়তে পারবো।”
দুই নেতা সামাজিক ব্যবসা, দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গঠন এবং ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দারিদ্র্য বিমোচনের কৌশল নিয়েও আলোচনা করেন।