• মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের দাবি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নিপীড়নের শিকার।
  • বাংলাদেশ সরকার অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
  • সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরেছে সরকার।
  • বাংলাদেশ সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কথা জানানো হয়েছে।
  • তথ্যভিত্তিক কূটনীতি ও সঠিক তথ্য প্রচারের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড দাবি করেন যে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বিশেষত হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায় সংগঠিত নিপীড়ন ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। সোমবার (১৭ মার্চ) এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী উগ্র ইসলামপন্থী সংগঠনগুলো খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে যা একটি বৈশ্বিক নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করছে।

গ্যাবার্ডের বক্তব্যের পরপরই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করা হয়। সরকার দাবি করে বাংলাদেশ বরাবরই ধর্মীয় সম্প্রীতির উদাহরণ হয়ে এসেছে এবং সকল ধর্মের মানুষের জন্য সমানাধিকার নিশ্চিত করেছে।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয় বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তা রয়েছে যেখানে সকল নাগরিক তাদের ধর্ম পালনের পূর্ণ অধিকার ভোগ করেন। সরকার উল্লেখ করে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে থাকতে পারে তবে সেগুলোকে কোনোভাবেই সামগ্রিক নিপীড়নের প্রমাণ হিসেবে দেখানো উচিত নয়।

বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে যে দেশটি বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস দমনে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে সহযোগিতা রয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার আরও জানায় যে,  নিজস্ব নিরাপত্তা নীতিমালা অনুসারে উগ্রবাদ মোকাবিলা করছে এবং এর সঙ্গে ইসলামিক খিলাফত প্রতিষ্ঠার কোনো সম্পর্ক নেই। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় এ ধরনের ভিত্তিহীন মন্তব্য বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।

বাংলাদেশ সরকার গ্যাবার্ডের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বলে যে কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক নেতাদের উচিত তথ্যভিত্তিক মন্তব্য করা। সরকার সতর্ক করে দিয়ে জানায় এই ধরনের অপপ্রচার সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দিতে পারে এবং কূটনৈতিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রসঙ্গত,  ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকেই ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের মিথ্যা অভিযোগ তুলতে থাকে। পশ্চিমা গণমাধ্যমে প্রথম দিকে এসব অপপ্রচারকে গুরুত্ব দিলেও পরে ভারতের এই অপপ্রচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়।

বাংলাদেশ সরকার জোর দিয়ে বলেছে যে, দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকার নিশ্চিত করেছে যে, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দীর্ঘ ঐতিহ্য অটুট রয়েছে এবং সংখ্যালঘুরা এখানে নিরাপদেই বসবাস করছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এই ‘প্রোপাগান্ডা যুদ্ধ’ আসলে বাংলাদেশকে কূটনৈতিকভাবে কোণঠাসা করার একটি প্রচেষ্টা, যা বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তবে বাংলাদেশ সরকার দৃঢ়ভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তথ্যভিত্তিক কূটনীতির ওপর জোর দিচ্ছে এবং গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সঠিক বার্তা পৌঁছে দিতে কাজ করছে।

Share.
সম্পাদক ও প্রকাশক: INFORMER365TEAM | Email: info@informer365.com
© 2025 Informer 365 বাংলা | Powered by Friday Pixels.
Exit mobile version