- দেশ-বিদেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রচার চলছে
- যুক্তরাষ্ট্রকে প্রকৃত পরিস্থিতি তুলে ধরার আহ্বান
- বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও জলবায়ু নিয়ে আলোচনা
- রোহিঙ্গা সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা কামনা
- বৈঠকের পর ইফতার ও নৈশভোজ
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর গ্যারি পিটার্সের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, দেশ-বিদেশের কিছু গোষ্ঠী বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়াচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সিনেটর পিটার্সের সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অনুরোধ করেন, যেন তিনি বাংলাদেশের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেন এবং অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সহায়তা করেন। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, তার সফরসঙ্গী প্রতিনিধিদল, ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সিনিয়র কূটনীতিক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা হয়, যার মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, জনগণের পারস্পরিক সংযোগ, সাইবার নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সিনেটর গ্যারি পিটার্সকে বাংলাদেশ সফরের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি সরকারের গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কেও সিনেটরকে অবহিত করেন। সিনেটর পিটার্স এসব উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
আলোচনার এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার ওপর গুরুত্ব দেন। তারা বিশেষভাবে বাণিজ্য বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা এবং নিরাপত্তা খাতে অংশীদারত্ব আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের মানবিক প্রচেষ্টার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, কক্সবাজার ও ভাসানচরে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন জরুরি এবং এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠেয় রোহিঙ্গা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় সহযোগিতার আহ্বান জানান।
সিনেটর গ্যারি পিটার্স বাংলাদেশের মহানুভব মানবিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, মিশিগানসহ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে এবং তাদের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে তিনি আনন্দিত। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা আরও জোরদার করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বৈঠকের শেষে উভয়পক্ষ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারত্ব আরও এগিয়ে নেওয়া ও নতুন সহযোগিতার সুযোগ খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে। সিনেটর পিটার্স বাংলাদেশের উষ্ণ আতিথেয়তার প্রশংসা করেন এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বৈঠকের পরপরই ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।